জনপ্রিয় চিত্রনায়ক এখন কাপ’ড়ের ব্যবসায়ী!

আঠারো বছরের মেয়ের আত্মহ’ত্যার কারণে সিনেমা থেকে সরে দাঁড়িয়ে পুরোদস্তর ব্যবসায়ী হয়েছেন এক সময়ের জনপ্রিয় নায়ক শাহিন আলম। আগে থেকে অভিনয়ের পাশাপাশি টুকটাক গার্মেন্টসের ব্যবসা ক’রতেন ‍তিনি। সেটাকে পুঁজি করে পরবর্তীতে জীবিকা হিসেবে নিলেন তিনি।

রাজধানীর গাউছিয়ায় তাদের পৈতৃক দুটো শোরুম ছিল। অভিনয় ছাড়ার পর সেখানেই তিনি নিয়মিত নিজেকে ব্যবসার সাথে জড়ান। ওই মা’র্কে’টে একটি শোরুম ভাড়ায় চলে। আরেকটি শোরুমে নিজে ব্যবসা করেন।

চলচ্চিত্র থেকে হুট করে সিদ্ধা’ন্ত নেওয়া শাহিন আলম জা’নান, ‘মেয়ের মৃ’ত্যুর জন্য সিনেমা থেকে সরে দাঁড়াই। যখন সিনেমা থেকে সরে দাঁড়াই তখন দুই তিনটি সিনেমা’র কাজ হাতে ছিল। সেগুলো শেষ করে একেবারে সিনেমা থেকে দূ’রে চলে যাই। অবশ্য কাজী হায়াতের অনুরো’ধে আরো দুটি ছবিতে কাজ করি।

শাহিন আলম শেষ ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান রকিবুল আলম পরিচালিত ‘দারোয়ানের ছেলে’ ছবির জন্য। এরপর কাজী হায়াতের দুটি ছবির কাজ করলেও আর তাকে নতুন কোনো চলচ্চিত্রে দেখা যায়নি।

তিনি বলেন, সিনেমা যখন পরিচালকদের হাত থেকে প্রযোজকের হাতে চলে গেল, তখন থেকেই সিনেমা’র অবস্থা খা’রাপ হয়ে যায়। ওই সময় প্রযোজকরা আমা’র কাছে ভালগার শট দেওয়ার অনুরো’ধ করে। আমি সেই শট দেইনি।

তবে তারা কাটপিস শুট করে করেছে পর্দায় ক্লোজ শটগুলো ব্যবহার করে। আমি দেখে বলেছিলাম, তারা বলে এসব না করে উপায় নেই। তখন থেকেই সিনেমা থেকে মন উঠে যায়। সিনেমা’র প্রতি যে নে’শা ছিল তা অশ্লী’লতার কারণে আর থাকেনি।

সিনেমা থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়ে নিজে’র বাবার শোরুমে বসতেন শাহিন আলম। বর্তমানে নিজে’র অসু’স্থতার কারণে আর সেই শোরুমেও বসা হয় না তেমন একটা। এ বিষয়ে শাহিন আলম বলেন, চার বছর থেকে কিডনি রো’গে ভুগছি। সাড়ে তিন বছর ধ’রে ডায়ালাইসিস করে চলছি। প্রতি সপ্তাহে তিন দিন সাভারের গণস্বা’স্থ্যকে’ন্দ্রে ডায়ালাইসিসের জন্য যেতে হচ্ছে।’

চলচ্চিত্রের মানুষেরা আপনার খোঁ’জ রাখে? এমন প্রশ্নে শাহিন আলম বলেন, সিনেমা’র লোকদের মধ্যে অমিত হাসান ও মিশা সওদাগর নিয়মিত রাখেন। স’ম্প্রতি শিল্পী সমিতি থেকে আমা’র সাথে দেখা করার জন্য কয়েকজন এসেছিল।

সিনেমা ছাড়ার দুবছর অনেকে যোগাযোগ ক’রেছেন। এখন আর কেউ করেন না বলেও অভিমানের তীর ছুড়ে দেন নিজে’র সহক’র্মী দের উপর। ১৯৮৬ সালে নতুন মুখের কার্যক্রমে অংশ নিয়ে প্রবেশ করেন সিনেমায়।

দেড় শতাধিক ছবিতে অভিনয় ক’রেছেন তিনি। ১৯৯১ সালে তার অভিনীত ‘মায়ের কান্না’ ছবিটি মু’ক্তি পাওয়ার পর একস’ঙ্গে ৭টি ছবিতে সাইন করেন। তখন থেকে তাকে আর পিছে ফি’রে তাকাতে হয়নি। এরপর টানা কাজ করে গেছেন এই অভিনেতা।

শাহিন আলম অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবি ‘ঘাটের মাঝি’, ‘এক পলকে’, ‘প্রেম দিওয়ানা’, ‘চাঁদাবাজ’, ‘প্রেম প্র’তিশোধ’, ‘টাইগার’, ‘রাগ-অনুরাগ’, ‘দাগি সন্তান’, ‘বাঘা-বাঘিনী’, ‘স্বপ্নের নায়ক’, ‘আরিফ লায়লা’, ‘আঞ্জুমান’, ‘অজা’না শত্রু’, ‘গরিবের সংসার’, ‘দেশদ্রোহী’, ‘বাবা’, ‘বাঘের বাচ্চা’, ‘বিদ্রোহী সালাউদ্দিন’, ‘তেজী পুরুষ’ ইত্যাদি।